বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ৩১শে ডিসেম্বর 'জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র' প্রকাশ করা হবে। একটি বিপ্লব সফল করার জন্য শুধু শক্তিশালী দাবিই নয়, প্রয়োজন সর্বজনীন সমর্থন, কৌশলগত নেতৃত্ব এবং গণতান্ত্রিক ন্যায্যতা। রাষ্ট্রীয়ভাবে জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। এটি শুধুমাত্র ঐতিহাসিক ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করবে না বরং বিপ্লবের নৈতিক ভিত্তি ও উদ্দেশ্যের প্রতি সম্মান জানাবে।

জুলাই বিপ্লব কেবল একটি রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীক নয়; এটি আমাদের জাতির আত্মপরিচয়ের পুনর্নির্মাণ। একটি সমতাভিত্তিক, বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার। আমাদের এই বিপ্লবকে স্বীকৃতি না দিলে তা আমাদের সংগ্রামকে অস্বীকার করার শামিল হবে।

৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে 'জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র' প্রকাশের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো উচিত। এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ, যা বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম বারবার প্রমাণ করেছে যে তারা শুধু দর্শক নয়, বরং পরিবর্তনের সক্রিয় কারিগর। 'জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র' একদিকে তাদের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের অভিজ্ঞতা ও লক্ষ্য প্রকাশ করবে, অন্যদিকে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে নতুন দিশা দেখাবে।

স্বৈরাচার, বৈষম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং ৯ দফা থেকে ১ দফায় এসে নতুন আন্দোলনের রূপরেখা তৈরির এই উদ্যোগ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী হতে পারে। এই ঘোষণাপত্র শুধু অতীতের ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা নয়, বরং এটি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ন্যায্য ও সমানুভূতিশীল সমাজের ভিত্তি স্থাপনের প্রতীক।

এই উদ্যোগকে সমর্থন করা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। এটি কেবল ছাত্র আন্দোলনের নয়, বরং সমগ্র জাতির জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। সময় এসেছে সবাই মিলে এই আন্দোলনকে শক্তিশালী করে তোলার এবং একটি সমতাভিত্তিক, বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার। আমাদের দাবিগুলো ন্যায্য, সুনির্দিষ্ট এবং অ-আলোচনাযোগ্য। এটি কেবল বিপ্লবীদের বিজয়ের স্বীকৃতি নয়, বরং একটি জাতির পুনর্জন্মের প্রমাণ।

ইব্রাহিম নীরব