কাতার বিশ্বকাপ
উনি আল্লাহর নামে কসম খেয়ে বললো এক কাতার বিশ্বকাপ দিয়ে যা হইসে এক হাজার জাকির নায়েক দিয়েও তা হবে না৷ এটা হচ্ছে বিশিষ্ট দায়ীর অবস্থা!

কোন এক ধনকুবের ব্যক্তির কথা বললো যে কি না দুইশো পঁচিশ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে এই বিশ্বকাপের পেছনে। এতে দ্বীনের খুউপ্প উপকার হয়েছে। আসেন আমরা অন্য একজন ধনকুবের আরবের গল্প শুনি। লিখেছেন মিজানুর রহমান ইবনে আলী।

----------

‘‘কাতার ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ আয়োজন করে যে দাওয়াহ দিয়েছে, আমরা এক হাজার জাকির নায়েক একত্রিত করেও সেই দাওয়াহ দিতে পারবো না। ওয়াল্লাহি! পারব না।’’

— ড. মিজানুর রহমান আজহারী

গত শতাব্দীর মহান মুজাদ্দিদ এতোই সম্পদশালী ছিলেন যে, চাইলে এমন একটি বিশ্বকাপের আয়োজন একক উদ্যোগেই করতে পারতেন। কিন্তু তিনি এসবে মুসলমানদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিজয় না খুঁজে এমন এক মহান কর্মযজ্ঞে নিজের সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে দিলেন, যার জন্য এই উম্মাহ কিয়ামত পর্যন্ত তার কাছে ঋনী থাকবে।

এতো সম্পদশালী হওয়া সত্ত্বেও যিনি পাহাড়ের দুর্গম এলাকার দুঃসহ জীবন বেছে নিয়েছেন উম্মাহর পরাজিত মানসিকতাকে আত্মবিশ্বাসের বলে শক্তিমান করার জন্য, সেই উম্মাহ আজ তার কর্মপন্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন কর্মপন্থার বন্দনায় মুগ্ধ হয়ে পড়েছে, যাতে মুসলমানদের মানসিক দাসত্ব প্রকাশ পাওয়া ছাড়া আর কোন অর্জন দেখা যায় না।

এই উম্মাহর সামরিক শক্তি নেই, অর্থনৈতিক সামর্থ্য নেই, শক্তিশালী জনবল নেই_ এসব আসলে কোন ওজরই হতে পারে না যদি মানসিক দাসত্ব প্রকটভাবে বিদ্যমান থাকে। এই উম্মাহ কেন উত্থিত হয়েছে সেই আত্মপরিচয়টা ভুলে যাওয়ার পরিণামই মূলত আমাদের সবচে' বড় দুর্বলতা। কুরআন ও সিরাহকে সামনে রাখলে আমাদের এই সংকট স্পষ্ট হবে এবং সমাধানের সদিচ্ছা থাকলে তাতে পথনির্দেশও পাওয়া যাবে।

তিনি বলতেন,

نرقع دنيانا بتمزيق ديننا * فلا يبقى ديننا ولا ما نرقع!

আমরা দ্বীনকে টুকরো টুকরো করে আমাদের দুনিয়াকে তালিযুক্ত করি (সাজাই), তাতে আমাদের দ্বীন তো বাকি থাকেই না, উপরন্তু তালিযুক্ত দ্বীন বেচে গড়ে তোলা দুনিয়াটাও কোন কাজে আসে না!

রহিমাহুল্লাহু রহমাতান ওয়াসিয়া!

------

দুইজনই বড়লোক। দুইজনের ভাষাতেই তারা ইসলামের জন্য নিজেদের সম্পদ ব্যয় করেছে। কিন্তু দুইজনের মধ্যে কত ফারাক!

যদ্দূর মনে পড়ছে, শায়খ ওবিএলের সাক্ষাৎকার নিতে দূর্গম পাহাড়ের গুহায় গিয়েছিলেন এক ইংল্যান্ডের সাংবাদিক। রাতে সেই লোককে শায়খ যে খাবার দিয়েছিলেন সেটা ছিল তাঁদের কাছে থাকা সবচে ভালো খাবার। সেই ভালো খাবারটা ছিল বাসি হয়ে যাওয়া গন্ধযুক্ত কয়েক টুকরো পিজ্জা।

জন্ম থেকে যে সোনার চামচ মুখে নিয়ে বড় হয়েছে, তাঁর জীবনের অবস্থা এই। ইসলামের জন্য টাকা তো তাঁরাও ব্যয় করেছেন। বাসি গন্ধযুক্ত পিজ্জার টুকরা ছিল তাঁদের সবচে উত্তম খাবার। অন্যদিকে আনন্দ-ফূর্তির জন্য যা থাকা দরকার সব ছিল তো ছিল, অপচয়ও হয়েছে - এটাও একটা অবস্থা।

দুই অবস্থা কি এক? দুইজনের কুরবানির মধ্যে কোনটা দ্বীনের জন্য? কাতার বিশ্বকাপ নাকি তোরাবোরা?

আজহারি সাহেবের কাছে তোরাবোরার এই কুরবানিকে মনে হয় আমেরিকার তৈরি। আর কাতার বিশ্বকাপ মনে হয় দ্বীনের খেদমত।

মডারেট ইসলাম অত্যন্ত ভয়ংকর!